বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫, ০৬:৩২ পূর্বাহ্ন
আশুলিয়ায় অ্যাম্বুলেন্স আটকে রেখে চালককে মারধরের সময় ক্যান্সার আক্রান্ত মুমূর্ষু শিশু আফসানা নিহতের ঘটনার প্রধান আসামি মাইক্রোবাস চালক নজরুল ইসলামের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এছাড়া গ্রেফতার অপর দুই আসামি হানিফ ও ইমরান নিজেদের দোষ স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছেন।
শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে এ তথ্য জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সামিউল ইসলাম। এর আগে, শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে ঢাকার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুজ্জামানের আদালতে তারা এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। এ ঘটনার সময় ভুক্তভোগী শিশুর পরিবার বারবার অনুরোধ করেও মারমুখী মাইক্রোবাসের চালককে থামাতে পারেননি। ঘটনার দিন রাতেই আশুলিয়া থানায় শিশুটির বাবা আলম মিয়া বাদী হয়ে ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরে ঘটনায় জড়িত প্রধান অভিযুক্তসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে আশুলিয়া থানা পুলিশ।
গ্রেফতার আসামিরা হলেন- এ ঘটনার প্রধান আসামি জামালপুর জেলার মেলান্দহ থানার মলকাকান্দা গ্রামের মো. কালাম মিয়ার ছেলে নজরুল ইসলাম (৩২)। বর্তমানে সে আশুলিয়া থানায় তিন দিনের পুলিশি রিমান্ডে রয়েছেন। টাঙ্গাইল জেলার ভুয়াপুর থানার দোপাকান্দী গ্রামের আব্দুর রহমান খানের ছেলে হানিফ খান (৪০) এবং টাঙ্গাইল জেলার ভুয়াপুরের খুপিবাড়ি গ্রামের মৃত সুরুজ মন্ডলের ছেলে মো. ইমরান (২৫)। হানিফ এবং ইমরান দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন। এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সামিউল ইসলাম বলেন, রিমান্ড শেষে আসামি হানিফ ও ইমরানকে আদালতে পাঠানো হলে বিজ্ঞ আদালতে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছেন।
এ ঘটনার প্রধান আসামি নজরুল ইসলাম তিন দিনের রিমান্ড রয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে শিশু আফসানাকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর মহাসড়ক হয়ে গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার উদ্দেশ্যে ফিরছিল মহাখালীর ক্যান্সার হাসপাতাল থেকে। ওভারটেকিং-এর মতো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আশুলিয়ার বাইপাইলে পৌঁছালে চলন্ত অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্সটিকে পেছনে থাকা একটি হায়েস মাইক্রোবাস সামনে এসে গতিরোধ করে। মাইক্রোবাসের চালক নজরুল নেমে অ্যাম্বুলেন্সের চালক ও সহকারীকে মারধর শুরু করে। পরে আরো কয়েকজন সহযোগীকে ডেকে আনে নজরুল ইসলাম। এক পর্যায়ে নজরুলসহ তারা অ্যাম্বুলেন্সের চাবিটিও ছিনিয়ে নেয়। এসময় অ্যাম্বুলেন্সেই ছটফট করতে করতে বাবার কোলে মারা যায় শিশু আফসানা।